Loading...
The Financial Express

১৩ দিন হেঁটে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এলেন পথিক মৃণাল দাস


১৩ দিন হেঁটে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এলেন পথিক মৃণাল দাস

"আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো, একুশে ফেব্রুয়ারী

আমি কি ভুলিতে পারি

ছেলেহারা শত মায়ের অশ্রু গড়ায়ে ফেব্রুয়ারী

আমি কি ভুলিতে পারি"

না, বাঙালি ফেব্রুয়ারি মাসের একুশ তারিখ ভোলে নি। আর তাই ৭১তম ভাষা দিবস উদযাপনে ১৩ দিন ধরে পায়ে হেঁটে কলকাতা থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এলেন ওপার বাংলার মৃণাল দাস (৫০)। 

কথা বললাম মৃণাল দাসের সাথে। জানালেন, ৭ ফেব্রুয়ারি কলকাতার লেক গার্ডেন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে শুরু করেছিলেন পদযাত্রা । ১৯ ফেব্রুয়ারি রোববার বিকেলে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে দেখা মিললো তার। কয়েক ঘন্টা আগে এসে পৌঁছেছেন ঢাকায়। আর ঢাকায় পা রেখেই চলে এসেছেন কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে। 

মৃণাল দাস পেশায় একজন গৃহশিক্ষক। বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার চুঁচুড়ায়। মৃণাল দাস বলেন,  ভাষা শহিদদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একুশের সম্মানে তিনি পাড়ি দিয়েছেন এতখানি পথ। সাথে ছিল পথ চলার আনন্দ। ভারতের ঘোজাডাঙ্গা সীমান্ত পার হয়ে সাতক্ষীরা জেলার ওপর দিয়ে এসেছেন বাংলাদেশে৷ চলার পথে বিশ্রাম নিয়েছেন চায়ের দোকান থেকে রাস্তায়, পেট্রোল পাম্প, দূর্গা-মণ্ডপ কিংবা স্কুলে। 

মৃণাল দাসকে দেখলে মনে পড়ে যায় তরুণ মজুমদার পরিচালিত পলাতক ছবির ‘জীবনপুরের পথিক’ গানটি। মৃণাল দাস যেন এ যুগের ‘জীবনপুরের পথিক’ - যার পথ চলাতে ক্লান্তি নেই, শ্রান্তি নেই। পথ হারাবার ভয়কে জয় করে বাংলার টানে যিনি চলে আসতে পারেন ৩০৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে। কাঁধে একখানা ব্যাগ, সাথে বাংলাদেশ ও ভারতের দুখানা পতাকা। 

মৃণাল বাবুর ভাষ্যে, সুর ও ভাষার মেলবন্ধনে তার এই অমর একুশে পদযাত্রা। তবে এই পথিক জানিয়েছেন, পদ্মাসেতু পার হতে পারেন নি পায়ে হেঁটে। সেতুর রাস্তাটুকু পদব্রজে আসবার অনুমতি মেলাতে পারেন নি, আসতে হয়েছে বাসে। 

বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ভাষা দিবসের নানা আয়োজন থাকে। তবু মৃণাল বাবু কেন ঢাকাতেই আসতে চাইলেন জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা যেখানে রক্ত দিয়েছিল তিনি সেখানেই আসতে চেয়েছিলেন। মৃণাল বাবু ফিরবেন পায়ে হেঁটে, আগরতলা দিয়ে ফিরবেন ২২ তারিখে।

ফাল্গুনের আট তারিখ বাংলা ভাষার জন্যে  যেসব রক্তরঙা কৃষ্ণচূড়া ঝরে গিয়েছিল, সেসব ফুল সত্যি সত্যি ঝরে যায় নি। ফুটে আছে আজো, ফুটে আছে প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে। রফিক, সালাম, বরকত, শফিউর, জব্বাররা স্মৃতি ও শ্রদ্ধায় অম্লান এবং অমর 

 

অনুস্কা ব্যানার্জী (শ্রাবস্তী) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত। 

  [email protected]    

Share if you like

Filter By Topic