পুঁজিবাজারে টানা দ্বিতীয় দিন ‘ঢালাও দরপতনে’ বিনিয়োগকারীদের হতাশা আরও বেড়েছে।
সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে কেবল ১৪টির। বিপরীতে দর হারিয়ে লেনদেন শেষ করেছে ১৪২টি কোম্পানি। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
১৪১টি কোম্পানি আগের দিনের দরে হাতবদল হয়েছে যেগুলোর প্রায় সবগুলো বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন দর বা ফ্লোর প্রাইসে রয়েছে। এগুলোর শেয়ারের চাহিদাও নেই সেভাবে।
সব মিলিয়ে লেনদেন হয়েছে ২৯৭টি কোম্পানির। অথচ বাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা ৩৯২টি। এর মধ্যে একটির লেনদেন স্থগিত। বাকি ৯৪টি কোম্পানির একটি শেয়ারও হাতবদল হয়নি।
বাজারের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আরও ৯ পয়েন্ট হারিয়ে অবস্থান করছে ৬ হাজার ২১৮ পয়েন্ট, যা গত প্রায় দেড় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। ২৭ কর্মদিবস আগে গত ১২ জানুয়ারি সূচক ছিল ৬ হাজার ২১৫ পয়েন্ট।
আগের দিনও বাজারে ছিল একই চিত্র। সেদিন ১৮টির দর বাড়ার বিপরীতে কমে যায় ১৪৮টির। আর লেনদেন হয়নি ৯৩টি কোম্পানির। সূচক কমে ১৮ পয়েন্ট।
এই দরপতনের দিন একটিই ইতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে আর সেটি হলো লেনদেন। আগের দিন তিন শ কোটি টাকার নিচে নেমে গেলেও সেখান থেকে কিছুটা বেড়ে হাতবদল হয়েছে ৩২৬ কোটি ৭২ লাখ ৬২ হাজার টাকা।
লেনদেন বেড়েছে ৪১ কোটি ৫৬ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ২৮৫ কোটি ১৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকার শেয়ার, যা ছিল গত ৮ জানুয়ারির পর সর্বনিম্ন।
পুঁজিবাজারের এই চিত্রের জন্য ফ্লোর প্রাইসকে দায়ী বলে মনে করেন ডিএসই ব্রোকার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “গতকাল পর্যন্ত টানা সাত দিন লেনদেন কমেছে। শুধু লেনদেন কমা নয়, একটার পর একটা প্রতিষ্ঠান শেষ হয়ে যাবে। আমরা তো বিনিয়োগকারীদের তাড়িয়ে দিয়েছি। ফ্লোর প্রাইস না উঠানো পর্যন্ত বাজার ঠিক হবে না। গলা টিপে রেখে বাজারকে স্থিতিশীল রাখা যায় না।”
লেনদেনে ‘ভারসাম্যহীনতা’
এদিন ২৯৭টি কোম্পানিতে যে লেনদেন হয়েছে তার ৫০ দশমিক ৬১ শতাংশই হাতবদল হয়েছে ১০ কোম্পানিতে। এসব কোম্পানিতে হাতবদল হয়েছে ১৬৫ কোটি ৩৭ লাখ ১৪ হাজার টাকা।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩৮ কোটি ১১ লাখ ৮১ হাজার টাকা হাতবদল হয়েছে শীর্ষে থাকা কোম্পানি জেনেক্স ইনফোসিসে।
অন্য কোম্পানিগুলো হলো বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, সি পার্ল হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট, শাইনপুকুর সিরামিকস, অলিম্পিক, জেমিন সি ফুড, আমরা নেটওয়ার্ক, ওরিয়ন ফার্মা, মুন্নু অ্যাগ্রো, এবং বসুন্ধরা পেপার।
এর মধ্যে দশম স্থানে থাকা বসুন্ধরা পেপারে লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৫৫ লাখ ৬১ হাজার টাকা।
অন্যদিকে লেনদেনের ৬৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ হাতবদল হয়েছে শীর্ষ ২০ কোম্পানিতে। এগুলোতে লেনদেন ছিল ২১৮ কোটি ৪৪ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। অর্থাৎ ২০টি কোম্পানির বাইরে লেনদেন ছিল মোট ১০৮ কোটি ২৭ লাখ ৭৮ হাজার টাকা।