ইউক্রেইনের আকাশ সুরক্ষিত রাখতে দেশটির কর্মকর্তাদের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও দেশটিতে এফ-১৬ জঙ্গিবিমান পাঠানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
সোমবার এক সাংবাদিক ডেমোক্রেট এ প্রেসিডেন্টতে তিনি ইউক্রেইনে অত্যাধুনিক জঙ্গিবিমান আদৌ পাঠাবেন কিনা, তা জানতে চাইলে বাইডেন জবাব সারেন এক শব্দে, ‘না’।
জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস ইউক্রেইনে যুদ্ধবিমান পাঠানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়ার একদিন পর তার এ মন্তব্য এল, জানিয়েছে বিবিসি।
ইউক্রেইন বলছে, রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধে নিজেদের আকাশসীমার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে জরুরিভিত্তিতে জঙ্গিবিমান দরকার। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
বিশ্বজুড়েই এফ-১৬ ফাইটার ফ্যালকনের চাহিদা আছে; যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি পাকিস্তান, বেলজিয়ামের মতো বেশ কিছু দেশ এটি ব্যবহারও করে।
ইউক্রেইন এখন যেসব বিমান ব্যবহার করছে, সেগুলো বানানো হয়েছিল সোভিয়েত আমলে। ওই সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে ইউক্রেইনের স্বাধীনতা লাভেরও তিন দশক পেরিয়ে গেছে।
তাদের এখনকার বিমানের তুলনায় এফ-১৬ অনেক অনেক বেশি অত্যাধুনিক হলেও বাইডেন বারবারই তাদেরকে যুদ্ধবিমান দেওয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে আসছেন; মার্কিন প্রেসিডেন্টের আগ্রহ অন্যান্য সামরিক সহায়তার দিকে।
গত সপ্তাহেই ওয়াশিংটন ইউক্রেইনকে ৩১টি আব্রামস ট্যাংক দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে; তাদের সঙ্গে গলা মিলিয়ে যুক্তরাজ্য এবং জার্মানিও জেলেনস্কির বাহিনীকে অত্যাধুনিক ট্যাংক দিতে যাচ্ছে।
এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে ইউক্রেইনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রিই মেলনিক মিত্রদেরকে ‘যুদ্ধবিমানের জোট’গড়ে তোলার অনুরোধ জানিয়েছেন। এফ-১৬ এর পাশাপাশি তিনি ইউক্রেইনের জন্য ইউরোফাইটার, টর্নেডো, ফরাসীদের রাফালে এবং সুইডিশদের গ্রিপেন জঙ্গিবিমানও চাইছেন।
কিন্তু রোববার এক সাক্ষাৎকারে জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস বলেছেন, মাত্রই লেপার্ড ২এস পাঠানোর আশ্বাস দেওয়ার পর ইউক্রেইনের জন্য এখনই অন্যান্য সামরিক সহায়তা বিষয়ক আলোচনাকে তার কাছে ‘ছেলেমানুষি মনে হচ্ছে’।
জার্মান গণমাধ্যম টাগেসপিগেলকে তিনি আরও বলেন, নেটো জোট রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করছে না, পরিস্থিতি সেদিকে যাক, সেটা চাইছেনও না তারা।
ইউক্রেইনে ভারি অস্ত্রশস্ত্র পাঠিয়ে নেটো এবং এর সদস্যরা আগ্রাসী ছায়া যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে বলে মস্কো অভিযোগ করে আসছে। এ ধরনের সামরিক সহায়তা সংঘাতের তীব্রতা আরও বাড়াবে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছে তারা।
সোমবার ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁও বলেছেন, ইউক্রেইনকে সহায়তার ক্ষেত্রে ‘কিছুই বাদ না পড়লেও’এমন কিছু করা যাবে না, যা আগুনে ঘি ঢালবে কিংবা ফ্রান্সের নিজের নিরাপত্তা সক্ষমতার ক্ষতি করবে।
বিবিসি লিখেছে, জঙ্গিবিমান বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি বা ফ্রান্স নেতিবাচক হলেও নেদারল্যান্ডসের মতো ইইউ-র অনেক দেশ এখনই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে নারাজ।
কেবল পোল্যান্ডকেই দেখা যাচ্ছে এক পায়ে খাঁড়া, তারা নেটোর সঙ্গে সমন্বয় করে ইউক্রেইনে যুদ্ধবিমান পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে ইঙ্গিতও দিয়েছে।