Loading...
The Financial Express

অ্যানিমেকন: অ্যানিমে জগতের অভিনব উদযাপন

| Updated: August 27, 2022 22:39:21


ঢাকা পপ অ্যান্ড কসপ্লে ফেস্ট ২০২২। সূত্র: হাসিন ইবতিদা ঢাকা পপ অ্যান্ড কসপ্লে ফেস্ট ২০২২। সূত্র: হাসিন ইবতিদা

জাপানিজ সংস্কৃতি এবং অ্যানিমের জনপ্রিয়তা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে এইটা নিয়ে মানুষের আগ্রহ ও বেড়েছে। অ্যানিমে ভক্তরা এই জনপ্রিয়তাকে আরও বিস্তৃত করতে তৈরী করেছে অ্যানিমে কনভেনশন বা সংক্ষেপে অ্যানিমেকন। অ্যানিমে কনভেনশন মূলত অ্যানিমে চরিত্রগুলোকে পর্দা থেকে বের করে বাস্তবে আনার উৎসব।

অ্যানিমে কনভেনশন হয় জাপানিজ অ্যানিমে সিরিজ, অ্যানিমে মুভি, মাঙ্গা এবং জাপানিজ সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করে। ১৯৭৫ সালে টোকিওতে প্রথম যে কনভেনশন হয় সেইটার নাম ছিলো কমিকেট। এই কনভেনশনে মানুষের সংখ্যা ছিলো প্রায় ৭০০।

অ্যানিমেকনের যাত্রা শুরু হয় আশির দশকে, কমিকেট থেকে ধারণা নিয়ে - যেখানে শুধুই জাপানিজ অ্যানিমে এবং মাঙ্গা কনভভেনশন হয়। অ্যানিমেপ্রামীরা তাদের প্রিয় চরিত্রগুলোর মতো সাজবে এবং ছোট - বড় স্ক্রিনে কিছু অ্যানিমে ক্লিপ দেখানো হবে। বর্তমানে পৃথিবীর সবথেকে বড় অ্যানিমে কনভেনশন হলো অ্যানিমে এক্সপো, যার ভক্তসংখ্যা প্রায় এক লক্ষ।

বাংলাদেশে অ্যানিমে কনভেনশনের যাত্রা

অ্যানিমের জনপ্রিয়তা বাংলাদেশের জন্য নতুন নয়। বাংলাদেশে প্রথম কমিক কন হয় ২০১২ সালে। কমিক কনে অ্যানিমে ক্যারেক্টারসহ কমিক ক্যারেক্টার, মুভি ক্যারেক্টার, এমনকি অনেক গায়কের কসপ্লে ও উপস্থাপন করা হয়।

বাংলাদেশের সবথেকে বড় অ্যানিমে কনভেনশন অ্যানিমেকন ঢাকা। ২০১২ থেকে হয়ে আসা এই কমিক কনের থেকে শুধুমাত্র অ্যানিমে এবং মাঙ্গা এর উপর প্রথম কনভেনশন করে ২০১৬ সালের, ২৬ আগস্ট। ৮০০-এর বেশি ভক্ত এই কনভেশনে অংশগ্রহণ করে। এই কনভেনশনের জন্য প্রতিবছর ভক্তরা অধীর আগ্রহে বসে থাকে।

অ্যানিমে শব্দটা যেমন জাপানিজ সিরিজ, সিনেমা, মাঙ্গা কমিক নিয়ে তেমন অ্যানিমে কনভেনশন শব্দটা অ্যানিমে ভক্তদের নিয়ে। অন্যান্য দেশে অ্যানিমে ছাড়াও কার্টুন নিয়ে কনভেনশন হলেও বাংলাদেশে শুধু অ্যানিমেকনটাই বেশি পরিমাণে লক্ষ্য করা যায়। দেশের সর্বত্র যারা অ্যানিমে ভক্তরা আছে তারা সকলে একসাথে একটা ভালো সময় কাটানোর জন্য আসে।

কনভেনশনগুলোতে অ্যানিমে প্রোডাক্টগুলোর স্টল বসে, কসপ্লে প্রতিযোগিতা হয়, প্রতিযোগিতায় মঞ্চায়ন, গান গাওয়া অন্তর্ভুক্ত থাকে। অ্যানিমের শেষ অথবা শুরুর কোনো গান উপস্থাপন করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে দক্ষ কসপ্লেয়াররা বাকি ভক্তদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। অনেকে আবার স্বীকৃতও পায়।

কসপ্লে মূলত একটা আর্ট যেখানে একজন কোনো সিনেমা, সিরিজ বা কমিক থেকে তার পছন্দের ফিকশনাল চরিত্রের মতো করে নিজেকে সাজানোর চেষ্টা করে। এই কসপ্লে করা হয় প্রিয় চরিত্রটার প্রতি ভালো লাগা দেখিয়ে।

উত্তরা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী, মুহতাসিম হোসেন বলেন, “কসপ্লে করা হয় ফিকশনাল কন্টেন্টের উপর শ্রদ্ধা ও আকর্ষণ থেকে। একজনের শখকে লালন করার উপায় হিসেবে।”

কসপ্লে করার কারণ হিসেবে ইডেন মহিলা কলেজে অধ্যায়নরত নাবিলা ঋতু এবং অধরা চৌধুরী বলেন, “আমরা যাদেরকে পছন্দ করি তাদের কস্টিউম বানাতে পারি এবং সেটা পরে তাদের মতো অনুভব করতে পারি। কসপ্লে করার কারণে তুমি কিছু সময়ের জন্য হলেও যে ক্যারেক্টারটাকে পছন্দ করেছ তার মতো হতে পারো।”

রাজধানী আইডিয়াল স্কুলে অধ্যায়নরত ইফতি মাহবুব বলেন, “কসপ্লে করলে আমার নিজের কাছে নিজেকে ভালো লাগে। আমাকে মানসিক শক্তি যোগায়, নিজের মধ্যে একটা আনন্দের অনুভূতি আসে।”

ওবানাই, ডেমন স্লেয়ার। সূত্র: ইফতি মাহবুব 

কোলাহলপূর্ণ বাস্তব দুনিয়া থেকে একটু দূরে গিয়ে নিজেদের পছন্দের দুনিয়াতে একটু সময়ের জন্য হারিয়ে যেতেও অনেকে কসপ্লে করে। সেখানে তারা নিজেদেরকে ভুলে তাদের পছন্দের অ্যানিমে চরিত্রটি হয়ে ওঠে।

ইএসএস (ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ড স্কুল) এর সাবেক শিক্ষার্থী, মোহাম্মাদ্দ খান হাসিব বলেন, কসপ্লে করি শখের বশে, বাস্তবতা থেকে একটু দূরে প্রিয় চরিত্রের সাজে।”

গিউ তমিওকা, ডেমন স্লেয়ার। সূত্র: মোহাম্মাদ খান হাসিব

নানামি কেন্তো।  সূত্র: অধরা চৌধুরী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত মুশফিরাত তাসকিন রোদসী বলেন, আমি অ্যানিমেকনে যাই কারণ আমার মনের সাথে মেলে এমন মানুষজনের সাথে আমি কথা বলতে পারি, তাদের সাথে পরিচিত হতে পারি। এই কনভেনশনের মাধ্যমে দেখা যায় দেশে কত অ্যানিমে ভক্ত আছে এবং তারা কতো সৃজনশীলতার সাথে অ্যানিমে চরিত্রগুলো উপস্থাপন করে। আর অ্যানিমেকনে যাওয়ার আরও একটি কারণ হলো এখানে এমন অনেক পণ্য পাওয়া যায় যা সচরাচর বাংলাদেশে পাওয়া যায় না।”

অ্যানিমে কনভেনশন কোথায় হয়

বাংলাদেশে বেশিরভাগ কনভেনশন হয় ঢাকাতে। কন্নভভেনশন হতে পারে কনভেনশন হলগুলোতে, হোটেলে বা কলেজ ক্যাম্পাসগুলোতে। ২০২২ সালের অ্যানিমেকন ঢাকা এর কনভেনশন হয় টোকিও স্কয়ারে।

সুরাইয়া ফাতিমা বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে অধ্যয়নরত।

s-14th-2019918686@mcj.du.ac.bd

Share if you like

Filter By Topic