চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যাত্রাবিরতি, আলোচনায় শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা
এফই অনলাইন ডেস্ক | Tuesday, 10 January 2023
আফ্রিকা মহাদেশে সফরে যাওয়ার পথে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রা বিরতি করেছেন চীনের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিন গ্যাং। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
সোমবার রাত ২টার পর ঢাকায় নেমে ৫২ মিনিটের এই যাত্রাবিরতি করেন তিনি। এ সময় বিমানবন্দরে তাকে সঙ্গ দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
তাদের আলোচনায় চীনের সহযোগিতায় বাস্তবায়িত প্রকল্প, বাণিজ্য ও আন্তর্জাতিক ফোরামে একসঙ্গে কাজ করাসহ বিভিন্ন বিষয় স্থান পায়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন পরে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা এক চায়নায় বিশ্বাস করি। এটা আমাদের মূলনীতি, আমরা ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি মেনে চলি। আমাদের সবাইকে নিয়েই চলতে হয়, আমরা টাইম টু টাইম তাদের সাপোর্ট চাইব।”
চীনের সঙ্গে বিপুল পরিমাণ বাণিজ্য ঘাটতির বিষয়টি বৈঠকে তুলে ধরার কথা জানিয়ে মোমেন বলেন, ঘাটতি কমাতে ৯৮ শতাংশ বাংলাদেশি পণ্যে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়ার কথা ছিল।
“কিন্তু গেজেটটা হয়নি বলে আামাদের ব্যবসায়ীরা এখনো সেই সুবিধা নিতে পারছেন না। আমি বলেছি, তারা ওই ঘোষণাটা (গেজেট) করে দিলে আমাদের জন্য সুবিধা হবে।”
অন্যতম বাণিজ্য অংশীদার চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার। তবে সেই পাল্লা চীনের দিকে অনেক বেশি ঝুঁকে আছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বিমানবন্দরে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান চীনের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিন গ্যাংকে।
২০২০-২০২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৬৮০ দশমিক ৬৫ মিলিয়ন ডলারের পণ্য চীনে রপ্তানি করেছে। এর বিপরীতে চীন থেকে আমদানি করেছে প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য।
২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে চীনের বাজারে ৯৭ শতাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়ে আসছিল বাংলাদেশ। গত অগাস্টে নতুন করে আরও ১ শতাংশ বাংলাদেশি পণ্য ও সেবার শুল্কমুক্ত সুবিধা দিতে সম্মত হয় চীন; তা কার্যকর হলে সব মিলিয়ে বাংলাদেশের ৯৮ শতাংশ পণ্য ও সেবা বিনাশুল্কে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশে প্রবেশাধিকার পাবে।
পদ্মাসেতুসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে ঠিকাদার হিসাবে চীনের সহযোগিতা, বিশেষ করে পদ্মাসেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পে চীনের সহায়তার বিষয়টি আলোচনায় স্থান পেয়েছে বলে জানান মোমেন।
তিনি বলেন, “বহুপক্ষীয় সংস্থাগুলোতে আমরা একসঙ্গে কাজ করি, সেগুলোও তাকে বললাম।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন
চীনা ঋণচুক্তির অর্থছাড়ের বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা তুলে ধরে মোমেন বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় অর্থ সহায়তার বেশ কিছু চুক্তি সই হয়েছিল। কিন্তু সবগুলো এখনো বাস্তবায়িত হয়নি।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেইজিং সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন জানিয়ে মোমেন বলেন, “জবাবে আমি তাকে নিয়মিত সফরে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি।
বেইজিং থেকে আফ্রিকা যাওয়ার পথে জ্বালানি সংগ্রহের জন্য ঢাকায় যাত্রাবিরতি করে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী উড়োজাহাজ। ইথিওপিয়াসহ আফ্রিকার পাঁচ দেশ সফরে যাচ্ছেন চীনের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।